কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রায় এক হাজার দোকান উচ্ছেদ করেছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজার নেতৃত্বে এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
এ সময় সময় শত শত রোহিঙ্গা উচ্ছেদস্থলে জড়ো হয়। দোকান হারিয়ে তাদের কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে। আবার অনেক দোকান-মালিক তাদের মালামাল উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, “রোহিঙ্গাদের পরিবার বড় হচ্ছে, তাদের সংখ্যা বাড়ছে, এখন তাদের তো শেড করে দিতে হবে। সেজন্য অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করছি। সব ক্যাম্পে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। আমরা প্রায় এক হাজার অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছি। মূলত শেল্টার তৈরির জন্য অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হচ্ছে।”
কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের দোকানদার আব্দুল মোতালেব বলেন, “এই দোকানগুলো ভেঙে এখানে নাকি বাড়ি করা হবে। আমার দোকান ভেঙে দিছে। এটাই আমার অবলম্বন ছিল। এখন কী করব জানি না।”
নুর হাসেম নামে এক মুদি ব্যবসায়ী বলেন, “দোকান ভেঙে ফেলছে। কিন্তু বসে থাকতে পারছি না। পরিবারকে খাওয়াতে হয়। আমার মা অসুস্থ, বাবার খরচ জোগাতে হয়। এখন আমার সব শেষ। কীভাবে বাঁচব আল্লাহ জানেন।”
এ বিষয়ে শিবিরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থার এক গবেষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের বঙ্গোপসাগরের ভাসানচর দ্বীপে যেতে রাজি করানোর জন্য তাদের দোকানগুলো ভেঙে দিচ্ছে।”
প্রায় সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গা সারা দেশের ৩৪টি শিবিরে রয়েছে। এদের অধিকাংশই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের হাত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এর মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হলেও অধিকার সংস্থাগুলো শরণার্থী শিবিরে বিধিনিষেধ এবং বন্যাপ্রবণ দ্বীপে স্থানান্তরের জন্য কর্তৃপক্ষের সমালোচনাও করেছে।